ঢাকামঙ্গলবার , ১৩ মে ২০২৫
  1. ইতিহাস
  2. জাতীয়
  3. বিনোদন
  4. বিশ্ব
  5. মতামত
  6. রাজনীতি
  7. শিক্ষাঙ্গন
  8. সর্বশেষ
  9. সারাদেশ

বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য

Chattogram vision
মে ১৩, ২০২৫ ১১:২০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

  • বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য

এস.এফ.এম. মোস্তাঈন বিল্লাহ- স্টাফ রিপোর্টার।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত বান্দরবান পার্বত্য জেলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ এক মনোমুগ্ধকর স্থান। সবুজে ঘেরা পাহাড়, গভীর জঙ্গল, কলকল করে বয়ে চলা ঝরনা, মেঘে ঢাকা পাহাড়ের চূড়া ও নদ-নদী মিলিয়ে বান্দরবান প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক স্বর্গভূমি।

বান্দরবানের সৌন্দর্যের মূল আকর্ষণ হল এর পাহাড় ও ঝরনা। নীলগিরি ও নীলাচল থেকে দেখা যায় মেঘে ঢাকা পাহাড়ের অপরূপ দৃশ্য। বিশেষ করে ভোরের সূর্যোদয় ও সন্ধ্যার সূর্যাস্ত এই স্থানগুলিকে করে তোলে আরও মোহনীয়।

এছাড়া চিম্বুক পাহাড়, যা দেশের অন্যতম উচ্চতম পয়েন্টগুলোর একটি, সেখান থেকেও মেঘ ছোঁয়ার অনুভূতি পাওয়া যায়।

বান্দরবানের বগালেক একটি প্রাকৃতিক হ্রদ যা ১২০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। এর স্বচ্ছ জল ও আশপাশের পাহাড় পরিবেশকে করে তোলে অতুলনীয়। আরেকটি আকর্ষণ প্রাচীন স্বর্ণমন্দির (Golden Temple), যা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান এবং একটি স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন।

এখানে রয়েছে বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়, যেমন—মারমা, বম, মুরং, ত্রিপুরা প্রভৃতি। তাদের নিজস্ব ভাষা, পোশাক, সংস্কৃতি ও জীবনধারা পর্যটকদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ তৈরি করে। এই নৃ-গোষ্ঠীগুলোর জীবনধারা আমাদের জন্য এক অনন্য সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা।

বান্দরবানে রয়েছে অনেক ঝরনা, যার মধ্যে নাফাখুম ও আমিয়াখুম ঝরনা বিশেষভাবে জনপ্রিয়। দুর্গম পাহাড়ি পথে হেঁটে এই ঝরনাগুলোতে পৌঁছাতে হয়, যা অভিযাত্রার আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

সব মিলিয়ে বান্দরবান একটি প্রকৃতির জাদুঘর, যেখানে পাহাড়, নদী, মেঘ, ঝরনা ও মানুষের সংস্কৃতি একত্রে মিলে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা তৈরি করে। প্রকৃতিপ্রেমী, ভ্রমণপিপাসু ও শান্তিপ্রিয় মানুষের কাছে বান্দরবান এক পরম আকর্ষণের স্থান।

প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক সৌন্দর্য :

১. তাজিংডং পাহাড়: বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হিসেবে পরিচিত। এর উচ্চতা প্রায় ১,২৮০ মিটার। দুঃসাহসিক অভিযাত্রী ও পর্বতারোহীদের জন্য এটি একটি দারুণ গন্তব্য।

২. কেওক্রাডং: আরেকটি বিখ্যাত পাহাড়, যার উচ্চতা প্রায় ১,২৩০ মিটার। এটি পৌঁছানোর পথটি খুবই মনোরম, পাশ দিয়ে বয়ে যায় পাহাড়ি নদী আর সবুজ বন।

৩. রিজুক ঝরনা: রুমা উপজেলায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক ঝরনা। ৩০০ ফুটেরও বেশি উচ্চতা থেকে গড়িয়ে পড়া জল ধ্বনি ও দৃশ্য দুটোই মনোমুগ্ধকর।

৪. সাঙ্গু নদী: বান্দরবানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নদী। এই নদী পাহাড় ঘেঁষে প্রবাহিত হয় এবং নৌভ্রমণের জন্য খুবই জনপ্রিয়।

৫. দেবতাখুম: পাহাড়ের মধ্যে ছোট খাড়ি বা খুম। নৌকায় করে চুপচাপ শান্ত জলের মধ্যে দিয়ে চলা এক অদ্ভুত মায়াবী অভিজ্ঞতা দেয়।

আদিবাসী সংস্কৃতি ও জীবনধারা:

বান্দরবানে প্রায় ১১টিরও বেশি জাতিগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে, তাদের মধ্যে অন্যতম হল—

০১.মারমা,০২.মুরং,০৩.বম,০৪.চাকমা,০৫.তঞ্চঙ্গ্যা,০৬খুমি০৭.লুশাই তাদের আলাদা ভাষা, ধর্ম (মূলত বৌদ্ধ), পোশাক, উৎসব, ও রীতিনীতিগুলো বান্দরবানের সংস্কৃতিকে করে তোলে বৈচিত্র্যময় ও আকর্ষণীয়।
বৌদ্ধ ধর্মীয় স্থাপনা যেমন—স্বর্ণমন্দির, ধাতুপাল রাজার কুয়া এবং বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ।

পর্যটনের গুরুত্ব ও অবদান:

বান্দরবান প্রতি বছর হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটক আকৃষ্ট করে।

এখানকার প্রকৃতি, নিরাপদ ভ্রমণ ব্যবস্থা ও স্থানীয়দের আতিথেয়তা পর্যটকদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ।

পর্যটনের মাধ্যমে এখানকার অর্থনীতি, হস্তশিল্প ও পরিবহন খাত ক্রমেই বিকশিত হচ্ছে।

এই ওয়েবসাইটের সকল কোনো লেখা, ছবি, অডিও বা ভিডিও “পেজ দ্যা নিউজ” কতৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত কপি করা দন্ডনীয়। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করলে কতৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রাখে।